বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২৮, ২০২৪
Homeগণমাধ্যমশেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান কবি আসাদ চৌধুরী

শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান কবি আসাদ চৌধুরী

spot_img

বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান কবি আসাদ চৌধুরী আর নেই। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) কানাডার টরেন্টোর একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কবির জামাতা ফ্রিল্যান্স চিত্রগ্রাহক নাদিম ইকবাল।

আসাদ চৌধুরী কয়েক বছর ধরে ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে টরন্টোতে বসবাস করছেন। কিছুদিন আগে এনজিওগ্রামে ধরা পড়া দুটি ব্লকের ৯৯ ও ৮৮ শতাংশ সারানো হয় তার। এরপর থেকে বাসায় ছিলেন।

কয়েক দিন আগে হঠাৎ অসুস্থ হলে তাকে আবারও টরেন্টোর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ না ফেরার দেশে চলে যান জনপ্রিয় এই কবি।

কবি আসাদ চৌধুরী ১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মোহাম্মদ আরিফ চৌধুরী এবং মাতার নাম সৈয়দা মাহমুদা বেগম। আসাদ চৌধুরীর স্ত্রীর নাম সাহানা বেগম।

আসাদ চৌধুরী উলানিয়া হাইস্কুল থেকে ১৯৫৭ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬০ সালে বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অধ্যয়ন করেন। বাংলা বিভাগ থেকে ১৯৬৩ সালে স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকে যাওয়ার পর কলেজে অধ্যাপনার মধ্য দিয়ে আসাদ চৌধুরীর চাকরি জীবন শুরু। ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে ১৯৬৪ থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন। পরবর্তীকালে ঢাকায় আসার পর তিনি বিভিন্ন খবরের কাগজে সাংবাদিকতা করেন। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য।

১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ভয়েজ অব জার্মানির বাংলাদেশ সংবাদদাতার দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকায় বাংলা একাডেমিতে দীর্ঘকাল চাকরির পর তিনি এর পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।

সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তার পদচারণা। তার প্রথম কবিতার বই ‘তবক দেওয়া পান’। কবি নামে পরিচিত থাকলেও শিশুসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক, ছড়াকারও ছিলেন তিনি। কিছু অনুবাদকর্মও সম্পাদন করেছেন। ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে তার রচিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শীর্ষক বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। তিনি একশর মতো বই লিখেছেন।

টেলিভিশনের পর্দা কিংবা সশরীরে যেকোনো অনুষ্ঠানে উপস্থাপক আসাদ চৌধুরীর কণ্ঠস্বর সবাইকে মুগ্ধ করতো। আশির দশকে রেডিও-টেলিভিশনে আজানের দোয়ার যে বাংলা অর্থ পাঠ করা হতো তা ছিল কবি আসাদ চৌধুরীর কণ্ঠ।

আসাদ চৌধুরী তার বর্ণাঢ্য জীবনে অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। এর মধ্যে ২০১৩ সালে রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক এবং ১৯৮৭ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার উল্লেখযোগ্য।

- Advertisement -spot_img
spot_img

সর্বশেষ খবর

spot_img
আরও খবর
spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here