আসন্ন এশিয়া কাপের জন্য ঘোষিত ১৭ সদস্যের স্কোয়াডে জায়গা পেয়েছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য তানজিদ হাসান তামিম। গতকাল ছিল দলের হয়ে তার প্রথম সংবাদ সম্মেলন। সেখানেই তিনি জানান, বড়দের হয়ে বিশ্বকাপ জয়ের কথা।
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্যদের মধ্যে সবার আগে জাতীয় দলে সুযোগ পান পেসার শরিফুল ইসলাম। এরপর সুযোগ পেয়েছেন মাহমুদুল হাসান, শামীম হোসেন, পারভেজ হোসেন, তাওহীদ হৃদয়। সর্বশেষ তানজিদ। মূলত সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালের ইনজুরির কারণে এশিয়া কাপে জায়গা পেয়েছেন তানজিদ।
জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েই বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখছেন তানজিদ। জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার পর প্রথম সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তানজিদ বলেন, ‘আমরা যেটা অর্জন করছি, সেটা তো এখন অতীত। সবার মধ্যে এখন একটাই কথা, একটা স্বপ্ন যে বড়দের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা। সবারই যখন দেখা হয়, সামনে যেহেতু বিশ্বকাপ, একটা জিনিসই মাথায় কাজ করে, আমরা এশিয়া কাপ যত টুর্নামেন্টই খেলি না কেন, ব্যাক অব দ্য মাইন্ডে কিন্তু ওয়ার্ল্ড কাপ থেকেই যায়। ইনশাআল্লাহ চেষ্টা করব এবার। যদি কপালে থাকে, ইনশাআল্লাহ হয়ে যাবে।’
বর্তমান সময়ে ওয়ানডে ক্রিকেট বদলে গিয়েছে অনেকটাই। তিন শ, সাড়ে তিন শ রান হচ্ছে হরহামেশাই। চার শ রান করাও চমকের কিছু নয়। এর জন্য ওপেনিংয়ে শক্ত ভিত্তি চায় দলগুলো। ঠিক সে কাজটি করে দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে তানজিদের। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তানজিদের উঠে আসা বয়সভিত্তিক দল থেকে। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য। বিশ্বকাপের পর অবশ্য অফ ফর্মে ছিলেন বেশ কিছুদিন। তবে এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দারুণ খেলে আবার ফোকাসে আসেন।
সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে তানজিদ ১১ ম্যাচ খেলেন। দুটি সেঞ্চুরি, একটি ফিফটিসহ রান করেছেন ৪৭৪। স্ট্রাইক রেট ৯৩.৩০। কয়েক দিন আগে হয়ে যাওয়া ইমার্জিং এশিয়া কাপেও ছিলেন বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সেরা ব্যাটসম্যান। শ্রীলঙ্কায় হয়ে যাওয়া সে টুর্নামেন্টে চার ম্যাচে ১৭৯ রান করেছেন তানজিদ, তাতে ফিফটি তিনটি, স্ট্রাইক রেট ১১৬.৯৯। শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের বিপক্ষে ৩৯ বলে ৫১, ওমানের বিপক্ষে ৪৯ বলে ৬৮ এবং ভারতের বিপক্ষে ৫৬ বলে ৫১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। তাতেই তার জায়গা মিলে এশিয়া কাপের ১৭ জনের স্কোয়াডে।
ইতিবাচক থেকে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলার কথাই জানান তানজিদ। তিনি বলেন, ‘দেখেন আমি এই সব চিন্তা করে ব্যাটিংয়ে নামি না। ব্যাক অব দ্য মাইন্ড এটাই থাকে যে পজিটিভ ক্রিকেট খেলব। অনেকেই বলে আমি অনেক অ্যাগ্রেসিভ ক্রিকেট খেলি। এই রকম না। আমি জাস্ট নরমাল থাকার ট্রাই করি। আমার স্ট্রেন্থের ওপর বিলিভ রাখার ট্রাই করি। আমি বিলিভ করি আমার স্ট্রেন্থে এবং পজিটিভ খেলায়।’
তানজিদের কাছে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার অভিজ্ঞতা জানতে চাওয়া হয়। উত্তরে বেশ আত্মবিশ্বাসী হয়েই তানজিদ বললেন, ‘প্রথমত, আলহামদুল্লিলাহ যে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছি। তার পরও এশিয়া কাপের মতো একটা মঞ্চে সুযোগ পেয়েছি। সিনিয়রদের সঙ্গে এর আগেও খেলা হয়েছে আমার। বিভিন্ন স্থানীয় টুর্নামেন্টে, বিসিবি প্রেসিডেন্ট কাপ, সব জায়গাতেই খেলা হয়েছে। উপভোগ করছি অনেক।’
এশিয়া কাপে তামিমের পরিবর্তে আরেক তামিম। তানজিদকে স্কোয়াডে পেয়ে এমনটাই ভাবছেন অনেকে। দুজনের নামের মিলের সঙ্গে খেলার ধরনেও মিল দেখছেন অনেকে। তরুণ অবস্থায় তামিম ইকবাল যেভাবে খেলতেন, এখন তানজিদ তামিম সেভাবেই খেলেন বলে জানিয়েছেন তার উঠে আসার অন্যতম কারিগর সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন। সব মিলিয়ে এখনই প্রত্যাশার চাপ অনুভব করছেন এই তরুণ। তবে তা নিয়ে চিন্তিত নন তিনি, ‘প্রফেশনালি ক্রিকেট খেলি। এটা প্রেশারের খেলা। গেমে অনেক ধরনের সিচুয়েশন থাকে, জিনিসটা যত তাড়াতাড়ি হ্যান্ডল করতে পারব, তত তাড়াতাড়ি আমরা বেটার ক্রিকেট খেলতে পারব।’