যশোরের বাঘারপাড়ার বন্দোবিলা ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামের এক প্রবাসীর বাড়ি ও নির্মাণধীন মার্কেটসহ গোডাউন দখল করে নিয়েছে সুমন নামে এক দুর্বৃত্ত। এ ব্যাপারে থানা পুলিশকে অবহিত করা হলেও ওই প্রবাসী নিজ বাড়িতে উঠতে পারছেন না। বর্তমানে ওই প্রবাসী জীবননাশের আতঙ্কে ভুগছেন। তিনি বিভিন্ন আত্মীয় বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
কেশবপুর গ্রামের আব্দুর রহিম মোল্লার ছেলে প্রবাসী ইদ্রিস আলী ১৯৯৫ সালে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। তিনি দীর্ঘ ২৮ বছর মালয়েশিয়ায় থেকে কাজ ও ব্যবসা করে টাকা জমান। এই টাকা দিয়ে ২০১২ সালে কেশবপুর গ্রামে বাড়ি নির্মাণ করেন। বাড়ি নির্মাণ করার সময় তার মেয়ে কাকলী নির্মাণ কাজের দেখভাল করেন। ২০১৬ সালে খালিয়া কেশবপুরের শান্তির মোড়ে তার পৈতিক জমিতে মার্কেট নির্মাণ করেন। মার্কেট নির্মাণ কাজের দেখভাল করেন তার ভাগ্নে কুখ্যাত সন্ত্রাসী ক্যাসিনো সম্রাট সুমন।
প্রায় ১০ শতক জমির ওপর ওই মার্কেটে ৮টি দোকান এবং আড়াই হাজার স্কোয়ার ফিটের একটি গোডাউন নির্মাণ করা হয়। এই নির্মাণ কাজের জন্য ইটভাটা ও দোকান থেকে রড-সিমেন্টসহ প্রয়োজনীয় দ্রব্যদি সব কিছুই ইদ্রিস আলীর নামে ক্রয় করেন। সম্প্রতি ইদ্রিস আলীর দেশে ফিরে আসার খবর পেয়ে কুখ্যাত সন্ত্রাসী ক্যাসিনো সম্রাট সুমন ওই বাড়ি ও মার্কেটসহ গোডাউনটি দখল করে নিয়েছে। গত ২৫ অক্টোবর ইদ্রিস আলী দেশে ফিরে এসে বাড়িতে তালাবদ্ধ দেখতে পান। তিনি তালা ভেঙে বাড়িতে প্রবেশ করতে গেলে কুখ্যাত সন্ত্রাসী ক্যাসিনো সম্রাট সুমন এক দল সন্ত্রাসী নিয়ে ইদ্রিস আলীর ওপর চড়াও হয়। পরে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে তালা মেরে দেন। বর্তমানে ইদ্রিস আলী আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
ইদ্রিস আলী জানান, তিনি ২৮ বছর ৪ মাস প্রবাসী কাটিয়েছেন। এসময় যে অর্থ জমিয়েছেন তা দিয়ে গ্রামের বাড়িতে বাড়ি ও মার্কেটসহ গোডাউন করেছেন। কিন্তু তার ভাগ্নে কুখ্যাত সন্ত্রাসী ক্যাসিনো সম্রাট সুমন সব কিছু দখল করে নিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমি সুমনকে কয়েকবার বিদেশে নিয়ে গেছি। সে আমার কাছে ৪ মাস কাজ করেছে। তার সব পাওনা টাকা আমি তাকে বুঝিয়ে দিয়েছি।
তিনি বলেন, সুমন আমার কাছে কাজ না করে ক্যাসিনো জুয়ায় কাজ করতো। তার সেখানে জুয়াবাজদের সাথে চলাচল করতো। সেখানকার পুলিশের সাথেও সুমনের ঝামেলা ছিলো।
তিনি বলেন, ২০২০ সালে তার মায়ের মৃত্যুর খবরটি পর্যন্ত দেয়নি। অথচ মা জীবিত থাকা অবস্থায় প্রতি মাসে সংসার খরচের জন্য তার বোনের কাছে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিয়েছেন। এত টাকা পাঠানোর পরও বোন ও ভাগ্নে তার মাকে খেতে দেয়নি। কিছু বললেই বৃদ্ধ মাকে মারপিট করেছে।
তিনি বলেন, মার্কেটটি তার পৈতিক জমিতে করা। তার বৃদ্ধ মাকে অস্ত্র ঠেকিয়ে এই জমি সুমন লিখে নিয়েছে। সুমন ও তার ক্যাডার বাহিনীর ভয়ে এখন আমি আমার বাড়িতে প্রবেশ করতে পারছি না। আত্মীয়দের বাড়িতে থাকতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বাঘারপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহাদৎ হোসেন বলেন, আমি অভিযোগ পেয়ে দু’পক্ষকে ডেকে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছি। ইদ্রিস আলীকে তার বাড়িতে ওঠার জন্য বলে দিয়েছি। কেউ যদি কোন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।