ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় বাংলাদেশে দাম বেড়ে গেছে বলে দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রীর পীযূষ গোয়েলকে জানানো হয়েছে।
আজ শুক্রবার ভারতের জয়পুরে অনুষ্ঠিত জি-২০ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্ত্রীদের সভার আগে পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে সাইডলাইনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে পেঁয়াজের দামের বিষয়টি তোলেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, বিশ্বব্যাপী উৎপাদনে ব্যাঘাত, সরবরাহের ঘাটতি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট অসুবিধাগুলি কাটিয়ে উঠতে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রতিকূল আবহাওয়া এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতির কারণে ভারতও কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদন ঘাটতিতে ভুগছে। এ কারণে ভারত সরকারকে কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
তিনি বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করে বলেন, খুব শিগগিরই এ সংকট কাটিয়ে ওঠা যাবে।
এছাড়া ভারত থেকে বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের একটি প্রক্রিয়া প্রণয়নের অগ্রগতির জন্য টিপু মুনশি ভারতীয় বাণিজ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রস্তাবিত ব্যবস্থার দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য তার ক্রমাগত সমর্থন আহ্বান করেন।
বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের পাটজাত পণ্যের ওপর থেকে এন্টি ডাম্পিং শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য ভারত সরকারের প্রতি অনুরোধ জানালে পীযূষ গোয়েল এ বিষয়ে সর্বোচ্চ বিবেচনার আশ্বাস দেন। এছাড়া, আলোচনার জন্য অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক ইস্যু আগামী দুই মাসের মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে উপস্থাপন এবং এগুলো নিষ্পত্তি করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী জি-২০ মন্ত্রী পর্যায়ের ঘোষণা চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মূল্যবান অবদানের প্রশংসা করে বলেন, ভারত সবসময় বাংলাদেশের সঙ্গে বিশেষ বন্ধুত্ব ও অংশীদারিত্বকে মূল্যায়ন করে থাকে।
বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী জি-২০ এর প্রেসিডেন্সি হওয়ায় ভারতকে অভিনন্দন জানান এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা ফোরামে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশকে অতিথি দেশ হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোয় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
পরে টিপু মুনশি সৌদি আরবের বাণিজ্যমন্ত্রী এমই মাজিদ আল কাসাবির সঙ্গে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। এ সময় দিল্লিতে অনুষ্ঠিতব্য জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্সের মধ্যে আসন্ন বৈঠক ফলপ্রসূ হবে বলে উভয় মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
সভায় দেওয়া বক্তব্যে তিনি বাংলাদেশসহ গ্র্যাজুয়েশন ট্র্যাকে থাকা দেশগুলোকে ২০২৬ সালের পর এলডিসি দেশসমূহের জন্য প্রযোজ্য শুল্কমুক্ত কোটা মুক্ত বাজার সুবিধা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে সমর্থন প্রদানের জন্য জি-২০ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান। আগামী ১৩তম বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে এলডিসি থেকে উত্তরণপ্রাপ্ত দেশগুলোর পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তিনি জি-২০ দেশের মন্ত্রীদের অনুরোধ করেন।