মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ৩, ২০২৪
Homeআন্তর্জাতিকআগামী কাল শুভ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল

আগামী কাল শুভ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল

spot_img

নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী কাল শুভ উদ্বোধন সামনে রেখে নান্দনিকতায় মোড়ানো হয়েছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় নাম্বার টার্মিনাল। কাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টার্মিনালটি সীমিত আকারে উদ্বোধন করবেন। আর এটি যাত্রীদের ব্যবহারের উপযোগী হবে ২০২৪ সালে। 

দৃষ্টিনন্দন টার্মিনালের ভবনটির নকশা করেছেন সিঙ্গাপুরের স্থপতি রোহানি বাহরিন। সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি, ভারত, ফিলিপাইন, চায়না, ভিয়েতনাম, মালদ্বীপের ভেলানাসহ বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দরের নকশাও করেছেন তিনি। তবে নান্দনিকতায় ঢাকার তৃতীয় টার্মিনাল ছাড়িয়ে গেছে থাইল্যান্ডের সুবর্ণভূমি ও তুরস্কের ইস্তানবুল বিমানবন্দরকেও। 

তৃতীয় টার্মিনালে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটারের করিডরে ঢুকলেই বুকিং কাউন্টার। এখান থেকে লাগেজ বুকিং করে যাত্রীরা যাবেন ইমিগ্রেশনে। পরে বডি স্ক্যানার আর অটোমেটিক লাগেজ চেক করা হবে। ছাদের গায়ে ফুটে আছে শত শত পদ্ম  ফুল। কাঁচে ঘেরা স্থাপনায় সহজেই ঢুকতে পারবে দিনের আলো। রয়েছে আধুনিক বোডিং কাউন্টার, ইমিগ্রেশন, অটোমেটিক লাগেজ চেক মেশিন, বডি স্ক্যানার। চলাচলের সুবিধার্থে থাকছে স্ট্রেইট এসকেলেটর ও বোডিং ব্রিজ।  

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান বলেন, ‘বহির্বিশ্বের যে কোনো দেশের সমতুল্য একটি বিমানবন্দর টার্মিনাল আমরা পাচ্ছি। এটা আমাদের জন্য একটি গর্বের বিষয় হবে। আকাশপথে যারা যাত্রা করেন, তারা বাংলাদেশে এসে ভাবমুর্তির একটি বিশাল পরিবর্তন দেখবেন এই নতুন টার্মিনালের মাধ্যমে।’ 

টার্মিনালের করিডর পার হওয়ার জন্য যাত্রীরা স্ট্রেইট এসকেলেটর ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। নান্দনিক লাউঞ্জ, লিফট, আধুনিক বোর্ডিং ব্রিজ দিয়েই উঠবেন ফ্লাইটে।  

এম মফিদুর রহমান বলেন, ‘মুভিং ওয়াকার, এসকেলেটর, এলিভেটর, ব্যাগেজ হ্যান্ডলিং সিস্টেম, সিকিউরিটি সিস্টেম এবং ইমিগ্রেশন সিস্টেমসহ সব আধুনিক ও অটোমেটেড সিস্টেম এখানে সংযুক্ত হতে যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় জিনিস হলো, দৃষ্টিনন্দন যে একটি অবস্থা। সুউচ্চ একটি বিল্ডিং, পর্যাপ্ত আলো এবং ন্যাচারাল আলো দিয়েই মানুষ চলাচল করতে পারবে।’ 

তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধনের আগেই শেষ হবে প্রকল্পের ৯০ শতাংশ কাজতৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধনের আগেই শেষ হবে প্রকল্পের ৯০ শতাংশ কাজ

বেবিচকের আশা, এই টার্মিনাল দেশে এভিয়েশনের হাব তৈরি করবে ও বিশ্বমানের যাত্রীসেবা নিশ্চিত করবে। 

২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন দেয় একনেক। শুরুতে এর নির্মাণব্যয় ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা টাকা ধরা হলেও পরে তা আরও ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়। এতে প্রকল্পের আকার দাঁড়ায় প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকায়। প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। 

প্রকল্পটির নির্মাণব্যয়ের বড় জোগান দিচ্ছে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকা। সংস্থাটি ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। আর বাকি ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা অর্থায়ণ করছে বাংলাদেশ সরকার।

টার্মিনালের মূল ভবনের আয়তন ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। জাপানি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিমুজি আর কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান স্যামসাং যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

বর্তমানে শাহজালালে যে দুটি টার্মিনাল আছে, সেগুলো বছরে প্রায় ৭০ লাখ যাত্রীকে সেবা দিতে পারে। তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে এ বছরে প্রায় ২ কোটি যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। 

তৃতীয় টার্মিনালের অ্যাপ্রোন বা পার্কিংয়ে এক সাথে ৩৭টি উড়োজাহাজ রাখার ব্যবস্থা থাকবে। যুক্ত হবে নতুন ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ, ১১টি বডি স্ক্যানার আর ১৬টি লাগেজ বেল্ট। এ ছাড়া থাকবে স্বয়ংক্রিয় ইমিগ্রেশন ব্যবস্থাপনা। গাড়ি পার্কিংয়ে রাখা যাবে এক সাথে প্রায় ১ হাজার ২৩০টি গাড়ি।

- Advertisement -spot_img
spot_img

সর্বশেষ খবর

spot_img
আরও খবর
spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here