মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
Homeসারাদেশচাঁদপুরে পীরের কথায় ৫২ বছর নয়টি গ্রামের নারীরা ভোট দিচ্ছেন না

চাঁদপুরে পীরের কথায় ৫২ বছর নয়টি গ্রামের নারীরা ভোট দিচ্ছেন না

spot_img

ভোট দিচ্ছে না চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৯টি গ্রামের নারীরা। কুসংস্কারের তোপে তারা অর্ধ শতাব্দী ধরে ভোটদানে বিরত রয়েছেন। এমনকি এখানকার অনেক নারী মনে করেন, তাদের ভোট দেওয়ার অধিকার নেই।

জানা গেছে, উপজেলার সাহেবগঞ্জ, গৃদকালিন্দিয়া ও চরমান্দারি গ্রামসহ ৯ গ্রামের নারীরা ভোট দেন নি বিগব ৫২ বছর ধরে। প্রতিবার নির্বাচনের সময় স্থানীয় প্রশাসন বহু চেষ্টা করলেও তাদের ভোটকেন্দ্রে নিতে পারছে না। তবে ভোট দিতে আগ্রহী তরুণ ভোটাররা। গত ইউপি নির্বাচনে দুই-একজন নারী ভোট দিয়েছিলেন। বলে জানিয়েছেন।

নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর ভারতের জৈনপুর থেকে আসা এক পীর খানকা স্থাপন করেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৬ নম্বর রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নে। ওই সময় এলাকাটিতে মহামারি কলেরা ছড়িয়ে পড়েছিল। তখন চলছিল স্থানীয় নির্বাচন। জৈনপুরের পীর ওই সময় ফতোয়া দেন নারীরা যেন ‘বেপর্দা’ অবস্থায় ঘর থেকে বের না হন। এরপর থেকে কুসংস্কার গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। ভোটদানে ধর্মে বিধিনিষেধ না থাকলেও বিরত থাকছেন ৯টি গ্রামের নারীরা। এরই মধ্যে কেটে গেছে প্রায় ৫২ বছর। এখনও ভোট না দেওয়ার ধারায় রয়েছেন তারা। শুধু তাই নয়, মুসলিম নারীদের উদ্দেশে পীর ওই ফতোয়া দিলেও ইউনিয়নের হিন্দু-খ্রিষ্টান নারীরাও ভোটদান থেকে বিরত রয়েছেন।

তবে এখানকার নারীরা পুরুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কৃষি আবাদ থেকে শুরু করে হাট-বাজার, অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা সব ক্ষেত্রেই অবদান রাখছেন। শিক্ষার হারেও পিছিয়ে নেই। শুধু ভোটেই বিপত্তি।

এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তোফায়েল হোসেন জানান, ওই উপজেলার ৯ গ্রামের নারী ভোটারদের ভোটদানে উৎসাহিত করতে সচেতনতামূলক সভা-সমাবেশ করা হয়েছে। সভায় কয়েকশ নারী ভোটার উপস্থিত ছিলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে তাদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। তারা আশ্বস্ত করেছেন, এবার ভোট দিবেন তারা। এছাড়া এবার নারীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য ওই এলাকার জনপ্রতিনিধি ও যারা নারীদের নিয়ে কাজ করেন, তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, এবার নারীরা ভোট দিতে কেন্দ্রে আসবেন

জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, ‘সচেতনতামূলক সভার মাধ্যমে ওই ইউনিয়নের নারীদের আমরা বুঝিয়েছি। দেশের অগ্রযাত্রা এগিয়ে নেওয়ার জন্য নারীদের অংশগ্রহণ দরকার। সরকার গঠন প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণ জরুরি, এসব বিষয় তাদের বোঝানো হয়েছে। সভায় যারা এসেছিলেন তারা সবাই হাত তুলে আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, এবার ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবেন তারা।

- Advertisement -spot_img
spot_img

সর্বশেষ খবর

spot_img
আরও খবর
spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here