মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
Homeঅপরাধনির্বাচনের আগ মুহূর্তে আওয়ামী প্রার্থীর পক্ষে বিপ্লবের বাড়িতে বিপুল পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য...

নির্বাচনের আগ মুহূর্তে আওয়ামী প্রার্থীর পক্ষে বিপ্লবের বাড়িতে বিপুল পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য মজুদ

spot_img

নিজস্ব সংবাদ দাতা:
জামালপুর সদর পাঁচ আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটারদের নিত্য পণ্য সরবরাহ করে নৌকার পক্ষে নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে আওয়ামী সমর্থক বিপ্লব নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ নিত্যপন্য প্যাকেট জাত খাদ্য দ্রব্য বাড়িতে মজুদ করার অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ঘোড়াদাব বাশ চড়া ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের ৫৪নং হরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি বিপ্লবের বাড়িতে বিপুল পরিমাণ প্যাকেটজাত নিত্যপন্ন খাদ্যদ্রব্য মজুদ করা হয়েছে। মেঘনা গ্রুপের উৎপাদিত ফ্রেস চাল, ডাল, তেল, চিনি, চা পাতাসহ বিভিন্ন খাদ্য পণ্য প্যাকেটজাত করে বিপুল পরিমাণ খাদ্যপণ্য মজুদ করেছে বিপ্লব।

৫৪ নং হরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি জামালপুর সদর পাঁচ আসনের আওতাধীন ভোট কেন্দ্র হওয়ায় এই খাদ্যদ্রব্য জনগণের মধ্যে বিতরণ করে অভিনব কায়দায় নৌকার পক্ষে নির্বাচনী প্রভাব বিস্তার করার অভিযোগ উঠেছে যা সম্পূর্ণ নির্বাচনী আইন প্রকাশ্য লঙ্ঘন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উক্ত এলাকার একাধিক ব্যক্তি প্রকাশ করেন।

খাদ্যপণ্য মজুদের বিষয়ে বিপ্লবের কাছে জানতে চাইলে তিনি সংবাদ কর্মীদের বলেন, এসকল খাদ্যপণ্য আমার দাদার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এলাকায় জনগণের মধ্যে সরবরাহের জন্য মজুদ করা হয়েছে এবং সকল খাদ্যদ্রব্য আগামী ১১ তারিখ অর্থাৎ নির্বাচনের পরে বিতরণ করা হবে।

বিপ্লবের দাদার কত তম মৃত্যুবার্ষিকী এই বিষয়ে জানতে চাইলে কত তম মৃত্যুবার্ষিকী সে বিষয়ে তিনি তৎক্ষণাৎ সঠিক তথ্য দিতে না পারলেও তার দাদা ১৯৮৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন বলে জানান এবং এরপর থেকে তিনি প্রতিবছর কিছু না কিছু খাদ্যদ্রব্য অথবা পোশাক জাতীয় ব্যবহার্য জিনিসপত্র এলাকাবাসীর মধ্যে বিতরণ করে বলে তিনি জানান। মজুদকৃত খাদ্য দ্রব্যের সঠিক তথ্য দিতে না পারলেও আনুমানিক বাজার দর ১৭ থেকে ১৮ লক্ষ টাকা বলে বিপ্লব জানায়। বিপ্লব নিজেকে ব্যবসায়ী দাবি করলেও সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি নিজেকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কর্মী বলে জানান।

১৭ থেকে ১৮ লক্ষ টাকার খাদ্যদ্রব্য দাদার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিতরণের জন্য আনার কথা প্রকাশ করলে এলাকায় ব্যাপক গুঞ্জন সৃষ্টি হয় এবং এলাকাবাসী বলেন দাদার নামে ৩৯ বছর পর ১৮ লক্ষ টাকার খাদ্যদ্রব্য বিতরণ করার বিষয়টি সত্যিই সন্দেহাতিত, এলাকাবাসী আরও বলেন, যে ব্যক্তি দাদার মৃত্যুর ৩৯ বছর পর দাদার নামে ১৭ থেকে ১৮ লক্ষ টাকার খাদ্যদ্রব্য বিতরণ করতে পারে তিনি কেন সাত থেকে আট লক্ষ টাকার গাড়ি নিয়ে চলাফেরা করে?, এই বিপুল পরিমাণ অর্থের অন্য কোন উৎস রয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী মত প্রকাশ করেন। বিপ্লবের বিষয়ে অধিকাংশ এলাকাবাসী মুখ খুলতে অপারগতা জানায়।

এ বিষয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের কাছে জানতে চাইলে একাধিক ব্যক্তি মত প্রকাশে অনিচ্ছুক বলে প্রকাশ করে। একটি গোপন সূত্র থেকে জানা যায় যে, তিনটি কন্টেইনারে এ ধরনের মাল আসার কথা থাকলেও অবশেষে একটি কন্টেইনারের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।

এই বিষয়ে এলাকাবাসী বলেন, বিপুল পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য মজুদের বিষয়টি এলাকাবাসী ও সাংবাদিকদের নজরে আসায় উক্ত কন্টেইনার এলাকায় প্রবেশ না করিয়ে অন্যত্র পাঠিয়ে দিয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানায়। উক্ত বিষয়ে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি জরুরী কাজে অফিসের বাহিরে আছে বলে সংবাদ কর্মীদের অবহিত করেন। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদকর্মীরা গেলে তিনিও জরুরী কাজে বাহিরে থাকায় তৎক্ষণাৎ পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

- Advertisement -spot_img
spot_img

সর্বশেষ খবর

spot_img
আরও খবর
spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here