বাংলাদেশে বড় একটি ভূমিকম্প অনুভূত হতে পারে , ৭.০-৮ থেকে ৮.৫ মাত্রার ভূমিকম্প সংঘঠিত হলে অনেক সম্পদ, প্রাণহানি হবে ভূমিকম্প সম্পর্কে সচেতন ও সঠিকভাবে সঠিক সময়ে কিছু সিদ্ধান্ত না গ্রহণ করার ফলে। ভূমিকম্প সম্পর্কে আমাদের ভয়-ভীতি আতঙ্ক বাদ দিয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে ভূমিকম্পকালে। সেই সচেতনতা, কিছু প্রস্তুতি ও ভূমিকম্পের সময়ে কীভাবে জীবন রক্ষা করা যাবে, সেটি নিয়ে এ লেখাটি।
* ভূমিকম্প যে কোনো সময় হতে পারে সে বিষয়ে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে, রাতে ঘুমের সময় ভূমিকম্প আমরা বুঝতে নাও পারি সে ক্ষেত্রে ২০ লিটার বালতিতে অর্ধেকের চেয়ে একটু পানি রেখে দিতে হবে, ভূমিকম্প হলে পানির আন্দোলনে একটা শব্দ হবে সেটাতে আমরা বুঝতে পারব ভূমিকম্প হচ্ছে।
* রাতে ঘুমের সময় ভূমিকম্প হলে বালিশ দিয়ে মাথা ঢেকে রাখুন।
* ভূমিকম্প সাধারণত টানা ১ মিনিটের নিচে হলে সেটা ৭.৫ বা ৭.৮ মাত্রার ভুমিকম্পের মধ্যে থাকে, আর ১ মিনিট উপরে কিংবা ২ মিনিটে বা ৪ মিনিট হয়ে গেলে সেই ভুমিকম্পের মাত্রা তা বেশি হতে পারে, এমন ভূমিকম্প হবার সম্ভাবনা খুবই কম।
-> ৭.৫-৮.০ মাত্রার ভূমিকম্প ৫০ সেকেন্ড থেকে থেকে ১ মিনিট ২০ সেকেন্ড হতে পারে।
-> ৮.০-৯.০ মাত্রার ভূমিকম্প ১ মিনিট ২০ সেকেন্ড থেকে ৩ মিনিট হতে পারে
-> ৯.০ -৯.৩ মাত্রার ভূমিকম্প ৪-৫ মিনিট হতে পারে।
-> ৯.৫-৯.৬ মাত্রার ভূমিকম্প ১০ মিনিট হতে পারে। ১৯৬০ সালে চিলির ভালদিভিয়া তে ৯.৬ মাত্রার ভূমিকম্প ১০ মিনিট ধরে হয়েছিল।
-> ১০ মাত্রার ভূমিকম্প কমপক্ষে ১৫-২০ মিনিট হতে পারে।
* ভূমিকম্প যখনি সংঘটিত হউক না কেন ওই সময়ে কেউ রান্না ঘরে অবস্থান করবেন না, গ্যাসের চুলাটি বন্ধ করে দেবেন যদি জ্বালানো থাকে, ভূমিকম্পের সময়ে গ্যাসের পাপে লাইন গ্যাস বিস্ফোরণ হতে পারে, জাপান পেরু বিশ্বের অনেক জায়গায় ভুমিকম্পে গ্যাস বিস্ফোরণের ফলে আগুন ধরে অনেকেই মারা গিয়েছে মাঝারি মাত্রার ভুমিকম্পে।
* ভূমিকম্পের সময় যারা অনেক উচুতে অবস্থান করেন তারা ভূমিকম্পের সময়ে সিঁড়িতে আশ্রয় নেবেন না, এটা নিরাপদ নয়।
* সিড়ি থেকে নিচে নামার পর খোলা স্থানে অবস্থান করুন আসে পাশে বিল্ডিং যেন না পড়ে সেইভাবে।
* ভূমিকম্পের সময়ে লিফট কোনো অবস্থাতে ব্যবহার করবেন না বা এস্কেলেটর বা এলিভেটর ব্যবহার করবেন না।
* ভুমিকম্পের সময় বৈদ্যুতিক লাইনের আসে পাশে থাকবেন না, শক্তিশালী ভূমিকম্প হলে বৈদ্যুতিক বিস্ফোরণ হতে পারে।
* মাঝারি -শক্তিশালী ভূমিকম্পের সময় গ্যাস লাইন লিকেজ হতে পারে ও বিস্ফোরণ হতে পারে।
* ভুমিকম্পের সময় ঘরের টেবিলের নিচে বা লোহার বা কাঠের শক্তিশালী খাট থাকলে তার নিচে অবস্থান করুন, কিংবা শক্তিশালী দেয়ালের বিম থাকলে সেটি ধরে থাকুন।
* ঘরে সব সময় ২-৩ টি মোটর সাইকেলের হেলমেট রাখুন, যদি কোনো দিন বড় ভূমিকম্প হয় সেই সময় আপনি ওটা পড়ে ফেলতে পারবেন, ৮.০ বা ৮.৫ মাত্রার অধিক শক্তিশালী ভূমিকম্প যদি ১ মিনিটের চেয়ে বেশি মিনিট ধরে জোরে কাঁপে সে ক্ষেত্রে।
* ভূমিকম্পের সময় হাতে দিয়াশলাই, লাইটার ও দাহ্য কোনো বস্তু রাখবেন না।
*ভূমিকম্পের সময় জানালা থেকে দূরে অবস্থান করুন।
* ঘরে সব সময় ৫ লিটার + ৫ লিটার ২ টা বিশুদ্ধ পানির বোতল সংরক্ষণ রাখুন, কমপক্ষে ১১ লিটার পানি ঘরে রাখুন সবসময়, যদি আপনি ভূমিকম্পতে আটকা পরে যান সেক্ষেত্রে কমপক্ষে ৩-৪ দিন আপনি বেঁচে থাকতে পারবেন পরিবারসহ উদ্ধার কাজ যদি দেরি হয়।
* ঘরে কিছু শুকনো চিড়া ও আপদকালীন সহজে খাওয়া যায় এমন খাবার রাখুন, ভূমিকম্পকালীন আপনি আটকা পরে গেলে।
* একটি সাধারণ মোবাইল রাখুন (5000 mah/4000 mah) যেটি আপনার বিপদজনক সময়ে জরুরি কল করতে সাহায্য করবে, সেটি চার্জ সংরক্ষণ করে রাখুন, রেডিও সংযোগ চালু আছে এমনটি নিশ্চিত রাখুন। ভূমিকম্পের বিপদকালীন সময় আটকা পরে গেলে, আপনি যাতে জরুরি সেবা পেতে ফোন করে যোগাযোগ করতে পারেন।
*রঙিন চশমা, মাস্ক ও অধিক ব্যাটারি যুক্ত ফ্লাশলাইট বা টর্চ লাইট রাখুন।
* ভূমিকম্প যদি একদিনে একাধিকবার মৃদু মানের ভূমিকম্প হতে থাকে কিছু সময় অন্তর অনুযায়ী তাহলে নিরাপদ গন্তব্যে অবস্থান করুন, এ রকম ভূমিকম্প ফলে মাঝারি বা শক্তিশালী ভূমিকম্প হতে পারে।
* ভূমিকম্পের ফলে লিকুইফিকশন হতে পারে ,সতর্ক থাকুন। বিশেষ করে যে সব জায়গায় কাদা,মাটি,খাল,নদী ,পুকুর ভরাট করে বাড়ি নির্মাণ করা ,সে সকল স্থানে ভূমিকম্প হলে ভূমিকম্প তীব্রতা বেশি হতে পারে ,সাথে সে সব স্থানে মাটি কাঁদায় ডেবে যেতে পারে।