নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী মহানগীতে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দুই চিকিৎসককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। একজন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসক এবং অন্যজন গ্রাম্য চিকিৎসক। রোববার (২৯শে অক্টোবর) দিবাগত রাতে এ দুটি হত্যা কাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
রামেক হাসপাতালের নিহত চিকিৎসকের নাম গোলাম কাজেম আলী (৪২)। তিনি চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন এবং গ্রাম্য চিকিৎসকের নাম এরশাদ আলী দুলাল (৪৫)। তার বাড়ি রাজশাহী নগরীর উপকণ্ঠ কচুয়াতৈল এলাকায়। তাকে অপহরণের পর কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
মৃত গোলাম কাজেম আলী রাজশাহীর পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে চেম্বার শেষ করে বাসায় ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে খুন হন ডা: কাজেম আলী। রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে রাজশাহী নগরীর বর্ণালী মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এই চিকিৎসক নগরীর উপশর এলাকায় থাকতেন। তার স্ত্রীও একজন চিকিৎসক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাতে চেম্বার শেষ কওে মোটরসাইকেলযোগে বাসায় ফিরছিলেন ডা: কাজেম আলী। নগরীর বর্ণালী মোড়ে একটি মাইক্রোবাস তার গতিরোধ করে। এরপর মাইক্রোবাস থেকে দুর্বৃত্তরা নেমে তার বুকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এবিষেয়ে মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: সোহরাওয়ার্দী জানান, নিহত চিকিৎসকের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রামেকের মর্গে রাখা হয়েছে। এ নিয়ে মামলার প্রক্রিয়া চলছে। কেন, কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তার তদন্ত চলছে। হত্যাকারীদের শনাক্ত করে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সাদা মাইক্রোবাসে করে রাজশাহী নগরীর কিস্টোগঞ্জ বাইপাস মোড়ে আসে মুখে কালো কাপড় বাঁধা কয়েকজন ব্যক্তি। তারা প্রথমে ফাঁকা গুলি ছুড়ে জনমনে আতঙ্ক তৈরি করে। পরে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যান দুলালকে। রাত ৮টার দিকে একটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে নিহত গ্রাম্য চিকিৎসক এরশাদ আলী দুলাল গ্রাম্য চিকিৎসক। রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সাদা মাইক্রোবাসে করে রাজশাহী নগরীর কিস্টোগঞ্জ বাইপাস মোড়ে আসে মুখে কালো কাপড় বাঁধা কয়েকজন ব্যক্তি। তারা প্রথমে ফাঁকা গুলি ছুড়ে জনমনে আতঙ্ক তৈরি করে। পরে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যান। রাত ৯টার দিকে নগরীর শাহমখদুম থানার সিটিহাট এলাকা থেকে তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, তাকেও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
নগরীর শাহমখদুম থানার ওসি ইসমাইল হোসেন জানান, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে স্বজনেরাই দুলালকে অপহরণ করে বলে পরিবার অভিযোগ করে। অপহরণের পর চন্দ্রিামা থানায় একটি অভিযোগও করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি উদ্ধার করে রাতেই রামেকের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে মরদহে হস্তান্তর করা হবে।
ওসি বলেন, ‘আমাদের থানা এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার হলেও এখানে মামলা হয়নি। চন্দ্রিমা থানার অপহরণ মামলাটিই এখন হত্যা মামলায় রূপ নেবে। হত্যাকারীদের ধরতে চন্দ্রিমা থানা পুলিশ কাজ করছে।’