মোতাহার মাতব্বর যশোর শহর রেলগেট ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক। অর্থ কষ্টে এখন বসবাস করেন চৌগাছা উপজেলার পুড়াপাড়ার গ্রামে। ১৯৭১ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা কয়েকটি ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের রান্না বান্না করতেন। এরপর সক্রিয় যুদ্ধেও অংশ গ্রহন করেছেন, কিন্ত তিনি মুক্তিযোদ্ধা হতে পারেননি। সন্মানজনক মৃত্যুর তাগিদে তিনি স্বীকৃতির দাবিতে প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন। বার বার রাজধানী ঢাকায় গেছেন। কিন্ত জোটেনি তার বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি।
জন্ম দিনাজপুর জেলা শহরের পৌর চাউলিয়াপট্টিতে। জীবনের তাড়না ও ক্ষুধার যন্ত্রনায় ১৯৭৭ সালে তিনি যশোর চলে আসেন। সেই থেকে এই যশোরে বসবাস তার। যশোর শহরের ৫নং ওয়ার্ড চোরমারা দিঘীর পাড় মহল্লায় ছিল তার বসবাস। তবে সর্ব হারা হয়ে শহরের জীবন যাপন এড়াতে এখন তিনি পুড়াপাড়ায় রয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির প্রতিবেদনে ২৯ নম্বর তালিকাভূক্ত, প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রী মো: মোস্তাফিজুর রহমান এমপি স্বাক্ষরিত। আরো স্বাক্ষর রয়েছে দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও, জামুকা প্রতিনিধি সদস্য ও ডেপুটি কমান্ডার নাজিম উদ্দিন আহমেদ, মুবির প্রতিনিধি আলহাজ্ব মো খতিব উদ্দিন আহম্মেদ, দিনাজপুর জেলা কমান্ডের সহকারী কমান্ডার (সাংগঠনিক) মো: আকবার আলী, সহকারী কমান্ডার (দপ্তর) মো: রেজাউল ইসলাম ঝুনু ও উপজেলা কমান্ডার মো: লোকমান হাকিমের।
এই ফরমে বলা হয়েছে মোতাহার মাতব্বর, পিতা- মৃত শফি মাতব্বর উপস্থিত স্বাক্ষ্যগনের স্বাক্ষ্য ও তার বক্তব্য মতে প্রশিক্ষন কেন্দ্রের বাবুর্চি থাকায় মুক্তিযোদ্ধা বিবেচিত হলো। এছাড়া তিনজন বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বাক্ষরিত প্রত্যয়ন রয়েছে। এতকিছুর পরও মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম ওঠেনি মোতাহার মাতুব্বরের। যথাযথ নিয়মে তালিকায় নাম ওঠানোর দাবিতে এই বঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার মাতব্বর প্রেসক্লাব যশোরে বুধবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে মোতাহার মাতব্বর বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বারেে গজেট নং- ০৩০৮০২০০৪১, মোহাম্মদ আলী, গেজেট নং- ১১৯৬৮ ও মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান গেজেট নং-০৩০৮০২০১১৯ একসাথে ৭নং সেক্টরে ছিলেন ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে। দিনাজপুর জেলার চকেরহাট, খানপুর, রামসাগর, শিকদারহাট, পুলেরহাট এলাকায় মোতাহার মাতব্বর মুক্তিযোদ্ধাদের রান্নাকারী বা বাবুর্চি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা ভাতা নয় বরং বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্মান সাথে নিয়ে মৃত্যুবরণ করতে চান।
চলতি বছরে তিনি প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন, মোতাহার মাতব্বরের স্ত্রী জামেলা বেগম, দুই বন্ধু আব্দুর রশিদ ও আইয়ুব হোসেন।
মোতাহার মাতব্বরের মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে বিষয়টির সত্যতা জ্ঞাপন করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইব্রাহিম খলিল বিচ্ছু। তিনি আরো বলেন, জামুকা প্রেরিত তালিকায় এই ব্যক্তির নাম রয়েছে ৪০৪ নং ক্রমিকে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যয়ন রয়েছে। যাচাই বাছাইয়ে তালিকাভূক্ত। এত কিছুর পরেও তার মুক্তিযোদ্ধা না হওয়াটা দু:খজনক। দ্রুত সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ তাকে বীর মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম উঠাবে এই আমার আশা।