আল-মায়ামী: মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতি এর আয়োজনে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতির সম্পত্তি ৫ বছর বয়সে তারিখঃ ২৪/০৩/১৯৬৬ ইং) ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সেজে মোর্শেদুল আলম গং কর্তৃক ২১ শে জানুয়ারী ২০২৫ বিজয় রাকিন সিটির সামনে মানববন্ধন এবং মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমিতির সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ বেলায়েত হোসেন।
তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, দখল ও দুর্নীতি করে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটের প্রতিবাদে ও মুক্তিযোদ্ধাদের ১৬.২ একর জমি রক্ষায় জাতীয় গৃহায়নে জমা দেওয়া ৩০০ জনের তালিকা যাচাই-বাছাই করে পুনর্বাসন করার দাবি করেন। পাঁচ বছর বয়সের ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা মোর্শেদুল আলম গংদের শাস্তি এবং দুইতি সমিতির টাকা দুর্নীতি করায় তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা এবং ৩০০ জন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা যাচাই-বাছাই করে ১৬.২ একর জায়গা পূনরায় বন্টনের দাবি জানান ।
তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতি সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন নেয়। ওই সমিতির কথিত মহাসচিব ও আওয়ামী লীগ নেতা মোর্শেদুল আলম জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে একটি দরখাস্ত করেন মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসনের জন্য। জাতীয় গৃহায়ন মন্ত্রণালয় সমিতির কাছে জানতে চায় আপনার সমিতির মধ্যে কতজন মুক্তিযোদ্ধা ও কী পরিমাণ জমির প্রয়োজন? ১৯৯৯ সালের ২৩ নভেম্বর ৩০০ জন মুক্তিযোদ্ধার নামে তালিকার হলফনামাসহ জাতীয় গৃহায়ন কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়।
এরপর জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ১৬.২ একর জমি বরাদ্দ দেয়। কিন্তু বরাদ্দপত্র সমিতির নামে না দিয়ে সমিতির মহাসচিব মোর্শেদুল আলম নামে বরাদ্দ হয়। এতে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিবাদ জানাই। কিন্তু সমিতির মহাসচিব আমাদের বিভিন্ন হুমকি, ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেন। ওই বরাদ্দপত্র নিয়ে সমিতির মধ্যে গোলযোগ দেখা দিলে আন্দোলনের মাধ্যমে পুনরায় বরাদ্দপত্র সমিতির নামে সংশোধন হয়। কিন্তু স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ শাসনামলে স্বৈরাচারের সাবেক মন্ত্রী শেখ সেলিম, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আ খ ম মোজাম্মেল হক ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাবেক পিএসসির চেয়ারম্যান এ টি আহমাদুল হক চৌধুরী, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও নুর মোহাম্মদ, ডিবি প্রধান হারুন, এডিশনাল আইজিপি ইব্রাহীম ফাতেমি, আব্দুর রহিম খান, এ কে এম সামসুদ্দিন, নুরুল আমিন ও নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা, সাবেক সচিব মিজানুর রহমান, মাহবুবুল আলম খান ও আবু আলম শহিদ খান, মফিকুল ইসলাম (আইজিপির ভাই), হেদায়েতুল ইসলাম, আবু আলম শহিদ খান, মেজর জেনারেল (অবঃ) আবু সাইদ, মেজর আরেফিন সালেহিন এবং ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা মোর্শেদুল আলম গং সম্মিলিতভাবে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতির ১৫ডি/১/২ প্রাতিষ্ঠানিক প্লটে (যা বর্তমান বিজয় রাকিন সিটি নামে পরিচিত) কাফরুল মিরপুরের অধীনে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দিয়ে ১৬.২ একর জমির ওপরে অবৈধভাবে ভবন নির্মাণ করেছে।
সেসব ভবনের ফ্ল্যাট অমুক্তিযোদ্ধাদের কাছে বেচা-বিক্রি করে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। তিনি আরো বলেন, ফ্যাসিষ্ট-খুনি হাসিনার বিশ্বস্ত সহচর, জুলাই মুভমেন্টে মিরপুরে ছাত্র-জনতার উপর গুলিবর্ষণকারী, বিজয় রাকিন সিটিকে অবৈধভাবে আওয়ামী পল্লী বানানোর মাস্টারমাইন্ড খুনি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা মোর্শেদুল আলম, সন্ত্রাসী আবদুল্লাহ আল মামুন লাভলু, রায়হান উদ্দিন আহাম্মেদ, এটিএম আহমেদুল হক চৌধুরী, আলী ইমাম চৌধুরী, মোঃ আজহারুল হক, এটিএম খালেদুজ্জামান, শাহজাহান, ইব্রাহীম ফাতেমী, আব্দুল হামিদ, কিশোরসহ বিজয় রাকিন সিটিতে যারা অবৈধ ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছে খুনি মোর্শেদুল আলম গংয়ের সেই সকল সদস্যদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, এজাহারভূক্ত আসামী এক অদৃশ্য শক্তির ইশারায় গ্রেফতার না হয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং বর্তমানে সরকার বিরোধী অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে।
এজাহারভুক্ত এসব চিহ্নিত আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের এবং যারা গ্রেফতার হয়েছে তাদের বিচার দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি। পাঁচ বছর বয়সে মোর্শেদুল আলম ও রায়হান আহমেদ এক বছর বয়সে কিভাবে আওয়ামী লীগ আমলে মুক্তিযোদ্ধা হন এবং মুক্তিযোদ্ধা সমিতির সেক্রেটারি হন তার বিচার করতে হবে। এবং পরিবারের সদস্যদের নামে বেনামে ৭০ টি ফ্লাট বরাদ্দ ও বিক্রি করার হিসাব দিতে হবে। মোর্শেদুল আলম ও মোহাম্মদ রায়হান বর্তমানে কাফরুল থানার হত্যা মামলায় ( মামলা নং ১৯/২৭৫) কারাগারে বন্ধি আছেন । তিনি বলেন, বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারে সুদৃষ্টি কামনা করে এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। সংবাদ সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নইম জাহাঙ্গির, আব্দুর সাত্তার, আব্দুল কাদের, আব্দুল বারি, মোকলেছুর রহমান,মোঃ মকবুল হোসেন, মোঃ কামাল হোসেন প্রমূহ হোক সবাই।
মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পত্তি পুনরুদ্ধার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা - ও দুর্নীতিবাজদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই আন্দোলন কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন সকল সদস্য। দাবিসমূহ: ১) তালিকা নাই-বাছাই করে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে সমিতির সম্পত্তি বুঝিয়ে দেওয়া। ২) খুনি, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা, দুর্নীতিবাজ আওয়ামী লীগ নেতা মোর্শেদুল আলম ও রায়হান উদ্দিন আহমেদ ও আব্দুল্লাহ আল মামুনের ফাঁসির দাবি। ৩) অন্যায় ও দুর্নীতি করে যারা সমিতির সম্পত্তি আত্মসাৎ ও দখল করেছেন তা সমিতির কাছে হস্তান্তর করতে হবে। ৪) অমুক্তিযোদ্ধা মোর্শেদুল আলমের সকল অনিয়ম দুর্নীতি তদন্ত সাপেক্ষে আইন অনুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।