বৈষম্যবিরোধী ছাএ আন্দোলনে পুলিশের ছোড়া গুলিতে চোখের আলো হারিয়ে প্রায় অন্ধ হয়ে জীবন পার করছেন অভিনেতা, নাট্য ও চলচ্চিত্র নির্মাতা মাসুদ মহিউদ্দিন।
দৃষ্টিশক্তি ফেরার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন তিনি। পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের রাজাখালী গ্রামে সবুজ প্রকৃতির মাঝে বেড়ে ওঠা হাস্যোজ্জ্বল এ মানুষটি ছোটবেলা থেকেই ছিলেন পরোপকারী ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার।
মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া মাসুদ মহিউদ্দিনের বাবা সৈয়দ আলতাফ হোসেন ছিলেন স্কুলশিক্ষক। তিন সন্তানের মধ্যে মাসুদ মহিউদ্দিন বড়। পটুয়াখালী টাউন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং পটুয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসিসহ অর্থনীতিতে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে জড়িয়ে পড়েন অভিনয়ে। অসংখ্য মঞ্চনাটক, টিভি ও সিনেমায় অভিনয়সহ একাধিক ধারাবাহিক নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন তিনি। দেশজুড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে মাসুদ নেমেছিলেন ছাত্রদের পাশে।
গত ১৯ জুলাই বেলা ১১টার দিকে ঢাকার উত্তরায় আন্দোলনরত অবস্থায় পুলিশের ছোড়া ছররা গুলি তার দুচোখে লাগে। আহত অবস্থায় উত্তরায় হাসপাতালে চিকিৎসক না পাওয়ায় এক বন্ধুর সহায়তায় রওয়ানা দেন আগারগাঁওয়ে। যাওয়ার পথেও বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন কয়েকবার।
হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণের কারণে যথাসময়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেননি। জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে সঠিক চিকিৎসা না মেলায় ইস্পাহানি ইসলামিয়া আই ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হসপিটালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চোখের কয়েকটি অপারেশন সম্পন্ন হলেও এখন পর্যন্ত দৃষ্টি ফেরেনি তার। তবে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক আশার আলো দেখিয়েছেন।
ইস্পাহানি ইসলামিয়া হাসপাতালে চিকিৎসায় এক চোখে ৬০ শতাংশ আলো এলেও অন্যটিতে এখন পর্যন্ত কোনো আলো আসেনি। আরও কিছু জটিল অপারেশনের পর হয়তো মিলতে পারে দৃষ্টি এমনটাই আশা করছেন চিকিৎসকরা। তবে কবে আবার দুচোখে দেখতে পারবেন, আবার কবে নাটক ও চলচ্চিত্রের কাজে ফিরতে পারবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তার।।#