বিরাট কোহলি ও শ্রেয়াস আইয়ারের জোড়া সেঞ্চুরিতে স্কোরবোর্ডে ৩৯৭ রান তুলে কাজ অনেকটাই সেরে রেখেছিল ভারত। তবে বিশাল রানের চাপে পড়েও ভেঙে পড়েনি নিউজিল্যান্ড। কেন উইলিয়ামসন ও ড্যারিয়েল মিচেলের দুর্দান্ত জুটিতে কক্ষপথেই ছিল কিউইরা। তবে তারা পেরে ওঠেনি মোহাম্মদ শামির কাছে। ৭ উইকেট তুলে নিয়ে একাই প্রতিপক্ষকে ভস্ম করেন এই পেসার। তাতে ৭০ রানের জয় নিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে গেল ভারত।
বিশাল রানের অর্জনে খেলতে নামা নিউজিল্যান্ড তাদের প্রথম উইকেট হারায় ৩০ রানে। ডেভন কনওয়েকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন শামি। ৩৯ রানের মাথায় আবারও শামির আঘাত। সেই উইকেটের পেছনেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আরেক ওপেনার রাচীন রাবীন্দ্র। এরপর ১৮১ রানের জুটিতে দলকে অনেকটাই যখন কক্ষপথে আনেন উইলিয়ামসন-মিচেল, তখনই শামির আঘাত। ২২০ রানের মাথায় উইলিয়ামসনকে ফেরানোর দুই বল পরেই টম ল্যাথামকে এলবিডাব্লিউ করেন।
এরপর গ্লেন ফিলিপসকে নিয়ে নিউজিল্যান্ডকে পথ দেখানোর চেষ্টা করেন মিচেল। তবে ২৯৫ রানের মাথায় মিচেল ফিরলে সম্ভাবনা প্রায় শেষ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারের ৭ বল বাকি থাকতে ৩২৭ রানে অলআউট হয় কিউইরা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১৩৪ রান আসে মিচেলের ব্যাটে।
ভারতের হয়ে একাই নিউজিল্যান্ড শিবির ধসিয়ে দেন শামি। ৯ ওভার ৫ বল করে ৫৭ রানের বিনিময়ে ৭টি উইকেট তুলে নেন তিনি। একটি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ সিরাজ, জাসপ্রিত বুমরাহ ও কুলদীপ যাদব।
এর আগে শ্রেয়াস আইয়ার ও বিরাট কোহলির সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৯৭ রানের পাহাড় গড়ে ভারত। বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে এত রান তুলতে পারেনি কোনো দলই।
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করা দলই বেশি জিতে, তাই টস জিতে ব্যাটিং বেছে নিতে দ্বিতীয়বার ভাবেননি রোহিত শর্মা। উদ্বোধনী জুটিতেই আসে ৭১ রান। এই রানে ২৯ বলে সমান ৪টি করে ছক্কা ও চারে ৪৭ রান করে বিদায় নেন রোহিত। পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে আসে ৮৪ রান। এরপর কোহলিকে সঙ্গে নিয়ে দারুণ গতিতে দলের রান এগিয়ে নিতে থাকেন শুভমান। ৪১ বলে অর্ধশতরান পূর্ণ করেন তিনি। তবে দলীয় ১৬৪ রানের মাথায় ঘটে বিপত্তি। সিঙ্গেল নিতে গিয়ে অস্বস্তিতে পড়েন শুভমান। এরপর মাঠ ছাড়েন এই ওপেনার। ৭৯ রান করা গিল উঠে গেলে মাঠে নামেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান শ্রেয়াস আইয়ার।
গিল চোট পেলেও ভারতের রান তোলার গতিতে একটুও ভাটা পড়েনি। কোহলি একটু রয়েসয়ে খেললেও আগ্রাসী খেলতে থাকেন আইয়ার। মাত্র ৩৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন এই ব্যাটার। ৪২ ওভারের মধ্যেই ৩০০ রান করে ফেলে ভারত। ১০৬ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করা কোহলি শেষ পর্যন্ত ৩২৭ রানের মাথায় ১১৭ রান করে আউট হন। ৯ চার ও ২ ছক্কায় এই রান করেন তিনি।
কোহলি ফেরার পর তাণ্ডব চালাতে থাকেন আইয়ার ও লোকেশ রাহুল। মাত্র ৬৭ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন আইয়ার। শেষ পর্যন্ত ১০৫ রান করে থামেন তিনি। ৪টি চার ও ৮ ছক্কায় এই রান করেন তিনি। এরপর সূর্যকুমার উইকেটে থিতু হতে না পারলেও রাহুল অপরাজিত ছিলেন ২০ বলে ৩৯ রানে। আর ইনজুরির কারণে ১৬৪ রানের মাথায় মাঠ ছাড়া শুভমান শেষদিকে মাঠে নেমে অপরাজিত থাকেন ৮০ রানে।