আমরা ঢাকার মিরপুর এলাকার এর সন্নিকটে অবস্থিত কাউন্দিয়া ইউনিয়ন এর দুর্ভাগা জনগন। মিরপুরের পাশে অবস্থিত এই কাউন্দিয়া ইউনিয়ন এলাকাটি সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দ্বীপ এলাকা হিসেবে পরিচিত। চারদিকে তুরাগ নদের তীরে গড়ে ওঠা ৩ লাখ মানুষের বসবাস এই জনপদে সারা বছর যাতায়াত করতে হয় নৌকায়। একটি ব্রিজের অভাবে দুই লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা ভুকছে। ব্রিজ নির্মাণ হলে ২ থেকে ৩ মিনিটে নদী পার হওয়া যাবে , সেই জায়গায় নদী পথে ৩০ মিনিটের বেশি সময় লাগে বলে দাবী কাউনদিয়া এলাকা বাসির।
সাভার উপজেলার এই ২২টি গ্রামে মানুষকে নদী পার হয়েই প্রতিদিন যেতে হয় শহর, হাটবাজার, অফিস-আদালত ও স্কুল-কলেজে। বছরের পর বছর ধরে বর্ষাকালে ও শুকনো মৌসুমে নৌকা দিয়ে তুরাগ নদী পার হওয়ার সময় অনেক মানুষ দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়ে আহত ও মারা যায়। এ এলাকায় মধ্যরাতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে ঘাটে নৌকা পাওয়া যায় না। বিশেষ করে, গর্ভবতীদের নিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছে বিপাকে ঘটেছে দুর্ঘটনা । গত পাঁচ বছরে ১৫০টির বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে, যার জন্য আমাদের কাউন্দিয়া পরিবার থেকে মা ও শিশু সহ ৮৬ জন মারা গেছে।
বর্তমানে কিছুদিন আগে আমাদের ২২ গ্রামের শতবছরের স্বপ্ন কাউন্দিয়া ব্রিজ একজন সভায় অনুমোদিত হয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু ০৬ সেপ্টেম্বর থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ব্রিজের উচ্চতা (তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে করার) জটিলতার কারনে ব্রিজ নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। বর্তমানে ব্রিজটি ৭.৬২ নেভিগেশন ক্লিয়ারেন্স উচ্চতা বিবেচনা করে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে ছাড়পত্র নিয়ে নির্মাণ কাজ শুরু করে ছিলো। কিন্তু দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় শ্রেণিতে গেজেট প্রস্তাবনা হওয়ায় ব্রিজের উচ্চতা বেড়ে ১২.২ মিটার নেভিগেশন ক্লিয়ারেন্স করার প্রস্তাবনা করে।
কিন্তু এই ব্রিজের প্রবেশ মুখের সামনে তুরাগ নদীর উপরে কিছু দিন আগে নির্মিত গাবতলি – আমিন বাজার রাস্তার ১২ লেন ব্রিজের নির্মাণ উচ্চতা ৭.৬২ মিটার এবং এই ব্রিজের পরবর্তী যেই সকল ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে যেমনঃ বিরুলিয়া ব্রিজ, আশুলিয়া বাজার ব্রিজ, প্রত্যাশা ব্রিজ, কামারপারা ব্রিজ, টঙ্গি ব্রিজ, টঙ্গি রেলওয়ে ব্রিজের উচ্চতা ৭.৬২ ও ৫.৫ মিটার ধরে নির্মাণ করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী সকল ব্রিজের মাঝে অবস্থিত এই কাউন্দিয়া ব্রিজটির উচ্চতা ১২.২ মিটার ধরে নির্মাণ করা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
মানববন্ধনে কাউনদিয়া বাসি সাংবাদিকদের আরো বলেন। এই এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে
আমাদের ২২ গ্রামের ৩ লাখ মানুষের একটা চাওয়া আপনি আমাদের এই কঠিন অবস্থা থেকে মুক্তি দিয়ে ব্রিজটি নির্মাণ কাজটি চালু করে দিবেন। তানাহলে আমাদের দুর্ভোগের দিন আবার শুরু হবে এবং নৌকা দিয়ে তুরাগ নদী পার হওয়ার সময় আমদের পরিবারের অনেক লোক দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়ে মারা যাবে তাছাড়া দৈনন্দিন জীবনের সকল মানবিক চাহিদা থেকে আজীবন বঞ্চিতই থেকে যাবো। আপনি আমাদের সপ্নের বাংলাদেশের পথ প্রদশক হিসেবে দেশের হাল ধরেছেন।
আমরা স্বাধীনতার পর থেকে এই ব্রিজটি হওয়ার আশায় ছিলাম, কিন্তু বিগত কেওই আমাদের এই সপ্নের ব্রিজটি করে দেয়নি।
অতএব আপনার নিকট আকুল আবেদন এই যে ২২ টি গ্রামের ৩ লক্ষ মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে ব্রিজের নির্মাণ কাজ আবার সচল করে দিবেন। আমরা কাউন্দিয়াবাশী আশা করি আপনি আমাদের নিরাশ করবেন না। বিভিন্ন দপ্তরে অনুলিপি দেয়।
কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ভুক্তভোগী জনগন
অনুলিপিঃ
১। উপদেষ্টা, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়
২। সচিব, সচিব দপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর
৩। সচিব, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়
৪। চেযারম্যান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ
৫। বেক্তিগত কর্মকর্তা, সচিব এর দপ্তর, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়
৬। প্রধান প্রকৌশলী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর
৭। প্রকল্প পরিচালক, পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ (১ম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্প
৮। নির্বাহী প্রকৌশলী, এলজিইডি, জেলা- ঢাকা
৯। উপজেলা প্রকৌশলী, এলজিইডি, সাভার, ঢাকা।