কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের প্রথম দিনে সেচ্ছাসেবকলীগ নেতার ওপর হামলা ও তার গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু আহত ওই নেতার খবর রাখেনি দলীয় কোনো নেতাকর্মী। এ রাগে ও ক্ষোভে গতকাল শুক্রবার সকালে প্রতিবাদ হিসেবে নিজেই নিজের গাড়িতে আগুন দিলেন ওই নেতা।
ওই নেতা হলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার বোডঘর কাঞ্চানপুর এলাকার ইব্রাহিম দেওয়ানের ছেলে মুঈন দেওয়ান (৩২)। তিনি কালিয়াকৈর পৌর সেচ্ছাসেবকলীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক। এছাড়াও রাজনীতির পাশাপাশি তিনি চন্দ্রা মুঈন ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বেতন বৃদ্ধির দাবীতে টানা আন্দোলনের নামে কালিয়াকৈর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক তান্ডব চালায় উত্তেজিত শ্রমিকরা। ওইদিনে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধসহ একটি ট্রাফিক পুলিশ বক্স, বেশকিছু গাড়ি ও মোটরসসাইকেলে আগুন, হাইওয়ে পুলিশ বক্স, পুলিশ ফাঁড়ি, যানবাহন, হাসপাতাল ও দোকানপাট ভাংচুর করা হয়। একই দিনটি ছিল বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের প্রথম দিন। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন মহলের অভিযোগ, বিক্ষুব্দ শ্রমিকদের আড়ালে এ তান্ডব চালায় বিএনপি-জামায়াত। অবরোধের প্রথম দিনেই তারা আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষে এ তান্ডব চালায় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
এর ধারাবাহিকতায় ওইদিন সন্ধ্যায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উপজেলার পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় অবরোধকারীরা ওই সেচ্ছাসেবকলীগ নেতার ওপর হামলা চালায়। এসময় তার ব্যক্তিগত গাড়িও ভাংচুর করা হয়েছে। অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান ওই নেতা। কিন্তু তিনি ওই হামলা ও গাড়ি ভাংচুরের কোনো প্রতিকার পাননি। ওই ঘটনার তিনদিন পেরিয়ে গেলেও উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগসহ অংগসংগঠনের কোনো নেতাকর্মী ওই আহত নেতার খোঁজ-খবর নেয়নি। এই রাগে, ক্ষোভে, অভিমানে প্রতিবাদ হিসেবে নিজেই নিজের গাড়িতে আগুন দিয়ে জ¦ালিয়ে দিলেন ওই নেতা। তিনি গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা সূত্রাপুর ইউনিয়নের বগাবাড়ির চকের একটি খালি স্থানে এমন কান্ড ঘটিয়েছেন।
ভুক্তভোগী নেতা মুঈন দেওয়ান জানান, ২০০৯ সাল থেকে ছাত্রলীগ করে আসছি। বর্তমানে আমি কালিয়াকৈর পৌর সেচ্ছাসেবকলীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক হিসেব দায়িত্বরত। কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের প্রথম দিনে আমার ওপর হামলা ও আমার গাড়ি ভাংচুর করা হয়। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও আমি আহত হয়েছি। অথচ দলীয় নেতাকর্মীরা আমার কোনো খবর নেয়নি। এর প্রতিবাদ হিসেবে আমি নিজের গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছি। তবে কারো প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই।
এব্যাপারে কালিয়াকৈর পৌর সেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক স্বপন সরকার বলেন, মুঈন দেওয়ান আমাদের কমিটির কেউ নন। তবে কে কার গাড়ি কি কারণে পুড়িয়েছে? এটা একান্তই তার ব্যক্তিগত বিষয়। এছাড়াও মুঈন দেওয়ানের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের বিব্রত করার জন্যই সে ওই ঘটনা ঘটিয়েছে।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান জানান, বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। এ বিষয়ে এখনো থানায় কোনো অভিযোগ দেয়নি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।